Friday, November 6, 2015

বাংলা ক্যালিগ্রাফি (ব্যবহারিক ও নীতিমালা) Bangla Calligraphy (practical system)




বাংলা ক্যালিগ্রাফি নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা চলছে। ক্যালিগ্রাফিতে এর ব্যবহারের নীতিমালা কি হওয়া উচিত এবং এর মূলভিত্তি কি। আমরা ঐতিহ্যগত ভাবে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে ১৮টি হরফ(সংস্কার ও আধুনিক আকার-আকৃতি) পেয়েছিলাম। ১৮০০ সালের পর তা নাগরি হরফের ও সংস্কৃত ভাষার সাথে মিল রেখে(কারণ সংস্কৃত শব্দ বাংলায় ঢুকাতে হবে) ৫০টি হরফ করা হয়। যাহোক ক্যালিগ্রাফিতে মূল হরফ ১৭টি। যথা- অ, ই, এ, ও, ব, গ, ঙ, চ, ড, ঢ, ঠ, ণ, থ, ফ, ম, শ, স
এখানে নোকতা পদ্ধতিতে দেখানো হয়েছে। আমরা প্রথমে ক হরফ দিয়ে আজ আলোচনা করবো। আসলে ব হরফ হলো মূল। 


‘ক’ অক্ষর গোমাংস। অভিধানে এর অর্থ করা হয়েছে- জ্ঞানহীন, বর্ণজ্ঞানহীন। আসলে বাংলার প্রাচীন সাংখ্য, তন্ত্রবাদী প্রকৃতিপূজক সম্প্রদায় বাংলা হরফের জন্মদাতা। ইতিহাসে দেখা যায়, পাল রাজারা বাংলা হরফকে অবহেলা না করলেও পৃষ্ঠপোষকতা করেনি। আর দখলদার সেনরাজারা সংস্কৃতকে জনগণের ওপর চাপিয়ে দিতে বাংলা ভাষা ও হরফকে অচ্ছুত ও ধ্বংস চালায়। একে পাখির ভাষা, ইতরভাষা, প্রাকৃত ইত্যাদি অপবাদ দিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। তারপর মুসলিম শাসকরা বাংলার পূনর্জীবন দেয়। এর সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং এর সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে। হরফের মান সম্পন্ন আকার-আকৃতি দেয়। ফলে বাংলা ভাষা ও লিপি নতুন জীবন পেয়ে দেশে নতুন জোয়ার আনে। কিন্তু আর্য ব্রাহ্মণরা এটা সহ্য করতে পারে না। তারা ফতোয়া দেয় - বাংলা লিপিমালা অচ্ছুত, ইতর হয়ে গেছে, ওটা ছুলে জাত যাবে। গরুর গোস্ত যেমন হিন্দুদের জন্য হারাম। বাংলা লিপিও তেমনি হারাম। সুতরাং ফতোয়া হল- ‘ক’ অক্ষর গোমাংস। কারণ বাংলা লিপি মুসলমানরা সংস্কার ও লালনপালন করে মুসলমান বানিয়ে তার জাত মেরে দিয়েছে।

ছবিতে ক হরফের জুঝ পরিচিতি দেয়া হয়েছে।